আজকে আমরা মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি সম্পর্কে আলোচনা করবো । যা বাউবি এইচএসসি ২৮৭১ পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র ইউনিট ১ জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান এর অন্তর্ভুক্ত।
মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি
রেডিও টেলিস্কোপ
Radio Telescope
যে যন্ত্রের সাহায্যে তারকা, গ্যালাক্সি, কোয়াসার এবং অন্যান্য নভোমন্ডলীয় বস্তু থেকে প্রাকৃতিকভাবে নির্গত তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ (রেডিও তরঙ্গ) সনাক্ত ও পরিমাপ করে ঐ সব বস্তু সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হয় তাকে রেডিও টেলিস্কোপ বলে ।
আমাদের মহাবিশ্বে নক্ষত্র, গ্যালাক্সিসমূহ পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে অবস্থিত। ঐসব নক্ষত্র বা গ্যালাক্সিগুলো সম্পর্কে আমরা উপাত্ত সংগ্ৰহ করতে চাই। কিন্তু সব নক্ষত্র বা গ্যালাক্সি আলোকীয় দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা যায় না। কিন্তু এসব মহাজাগতিক বস্তু থেকে নির্গত তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ বিশেষণ করে আমরা নক্ষত্র, সৌরজগত বা মহাবিশ্ব সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি ।
বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্র বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞানে ব্যবহৃত এক ধরণের দিকনির্ভর বেতার অ্যান্টেনা, যা একই সঙ্গে কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাশূন্য সন্ধানী যান থেকেও উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারে।
মূলনীতি:
রেডিও টেলিস্কোপ যে মূলনীতিতে কাজ করে, তাহলো মহাকাশের বিভিন্ন জ্যোতিষ্ক থেকে তাপীয় নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন রেডিও তরঙ্গ গ্রহণ ও বিবর্ধন করে তা বিশেষণ করা। এ যন্ত্রের মৌলিক কার্যনীতি দৃশ্যমান তরঙ্গদৈর্ঘ্যে ব্যবহৃত প্রতিফলক দূরবীক্ষণ যন্ত্রের অনুরূপ। আপতিত তরঙ্গ তা বেতার বা দৃশ্যমান যা-ই হোক না কেন, একটি নিখুঁত দর্পণে বাধাগ্রস্থ হয়ে একটি সাধারণ অভিসারী বিন্দুতে মিলিত হয়।
এক্ষেত্রে প্রতিফলক পৃষ্ঠতল আপতিত তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বৈশিষ্ট্যগুলো বেশ গুর“ত্বপূর্ণ। প্রতিফলক পৃষ্ঠতলের আকৃতি এমন হতে হবে যেন বেতার তরঙ্গগুলো প্রতিফলনের পর অভিসারী বিন্দুতে একই দশায় মিলিত হতে পারে। এজন্য প্রতিফলন বিন্দু থেকে অভিসারী বিন্দু পর্যড্ পথের দৈর্ঘ্য পৃষ্ঠতলের বিভিন্ন বিন্দুতে একই হতে হবে। প্রতিফলন পৃষ্ঠতলটি পরাবৃত্ত আকৃতির করে এই শর্ত পূরণ করা হয়। এজন্য আধুনিক বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্রগুলোর প্রতিফলন পৃষ্ঠতল তথা ডিশের আকৃতি পরাবৃত্তীয় হয়ে থাকে।
গঠন:
রেডিও টেলিস্কোপ মহাশূন্য হতে আগত রেডিও তরঙ্গসমূহকে সনাক্ত করতে পারে। রেডিও টেলিস্কোপ সাধারণ অপটিক্যাল টেলিস্কোপ হতে অনেক বড় আকারের হয়ে থাকে। কারণ হলো, রেডিও তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তুলনায় বড়। রেডিও টেলিস্কোপের মধ্যে তিনটি প্রধান অংশ থাকে। এগুলো হলো-
(১) রেডিও প্রতিফলক ডিশ-
এর কাজ হচ্ছে আপতিত বিকিরণ সংগ্রহ করে একটি বিন্দু অভিসারী করা।
(২) রেডিও বা বেতার এন্টেনা-
এটি ফোকাস বিন্দুতে স্থাপন করা হয় এবং প্রতিফলিত তরঙ্গসমূহকে ধারণ করে ।
(৩) রেকর্ডার বা তথ্য প্রদর্শনী যন্ত্র-
এর কাজ হলো বিবর্ধিত উপাত্তকে বিজ্ঞানীদের বোধগম্য ভাষায় প্রদর্শন করা।
রেডিও দূরবীক্ষণ যন্ত্র ভূমিতে ও কৃত্রিম উপগ্রহে স্থাপন করা যায়। ভূমিতে স্থাপিত এ যন্ত্রের সাহায্যে মহাজাগতিক উৎস থেকে আগত 1 mm থেকে 10m তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রেডিও তরঙ্গ সনাক্ত করা যায়। বেতার যন্ত্রগুলো জনবসতি থেকে দূরে স্থাপন করা হয় যাতে বেতার যন্ত্র, টেলিভিশন, রাডার ইত্যাদি তাড়িতচৌম্বক ব্যতিচারের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা যায়। সেজন্য একে সাধারণত বিউৰ্ণ সমতল উপত্যকায় স্থাপন করা হয়।
কৃত্রিম উপগ্রহ
Artificial Satellite
কৃত্রিম উপগ্রহ হলো এক ধরণের মহাশূন্যযান যা নির্দিষ্ট কক্ষপথ থেকে পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্য, বা অন্য কোনো গ্রহের চারদিকে আবর্তন করে। ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজ্ঞানীরা স্পুটনিক-১ নামে মহাকাশে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করেন। বর্তমানে কৃত্রিম উপগ্রহের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং মহাকাশে বিপুল সংখ্যক কৃত্রিম উপগ্রহ বিভিন্ন ধরণের কাজে নিয়োজিত আছে।
কৃত্রিম উপগ্রহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। যোগাযোগ (টেলিফোন, রেডিও ও টিভি সম্প্রচার), পরিবেশগত গবেষণা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদান, সামরিক গোয়েন্দাগিরি ও মহাকাশ গবেষণা ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়। আমরা এ অনুচ্ছেদে মহাকাশ গবেষণা তথা জ্যোতিবিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণার কাজে কৃত্রিম উপগ্রহের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করব।
মূলনীতি:
আমরা জানি, একটি কৃত্রিম উপগ্রহ নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। এজন্য কৃত্রিম উপগ্রহের উপর ক্রিয়াশীল কেন্দ্রমুখী বলের প্রয়োজন। কৃত্রিম উপগ্রহের উপর পৃথিবীর অভিকর্ষ বল, প্রয়োজনীয় কেন্দ্রমুখী বল সরবরাহ করে । কৃত্রিম উপগ্রহকে রকেটের সাহায্যে এর নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। কৃত্রিম উপগ্রহকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় তুলে ভূ- পৃষ্ঠের সমাালে নির্দিষ্ট বেগ দেয়া হয়। তখন কৃত্রিম উপগ্রহটি পৃথিবীর আকর্ষণের প্রভাবে নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবিরত ঘুরতে থাকে। কৃত্রিম উপগ্রহের ভর, m এবং পৃথিবীর ভর, M হলে, কৃত্রিম উপগ্রহের বেগ, v হবে-
V = √(GM/r) এখানে, r=R+h
এখানে r হলো পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে কৃত্রিম উপগ্রহের দূরত্ব। এ সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, কৃত্রিম উপগ্রহের বেগ এর ভরের উপর নির্ভরশীল নয়।
আবার কৃত্রিম উপগ্রহের উচ্চতা h হলে,
h = (GMT2/4π2) – R
এখানে T হলো কৃত্রিম উপগ্রহের আবর্তনকাল।
মহাকাশ পর্যবেক্ষণে কৃত্রিম উপগ্রহ:
মহাকাশের মহাজাগতিক বস্তু (Celestial bodies) সম্পর্কে গবেষণার জন্য বিশেষ ধরণের কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করা হয়। মহাকাশে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার বাহক (Carrier) হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন ধরণের তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ। যেমন -বেতার তরঙ্গ, অবলোহিত তরঙ্গ, দৃশ্যমান আলো, অতিবেগুনী রশ্মি, এক্স রশ্মি, গামা রশ্মি ইত্যাদি ঐ সকল বস্তু থেকে বা ঘটনায় নিঃসৃত হয়। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের গ্যাস, ধূলিকণা, আর্দ্রতা মহাকাশের বস্তু পর্যবেক্ষণে বাধা হিসেবে কাজ করে।
নিঃসৃত বিকিরণের প্রধান অংশ ১৮ মাইল পুর বায়ু ড়র দ্বারা শোষিত বা প্রতিফলিত হয়। ফলে পৃথিবী শুধু দৃশ্যমান বিকিরণ ও রেডিও তরঙ্গের সামান্য পরিমাণ গ্রহণ করে। এসব কারণে কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উপরে গিয়ে বিশেষ ধরনের টেলিস্কোপ স্থাপন করে মহাজাগতিক বস্তু পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান করা হয়। হাবল টেলিস্কোপ, এক্স-রে টেলিস্কোপ, গামা-রে টেলিস্কোপ এ ধরনের টেলিস্কোপ।
১৯৯০ সালের এপ্রিল মাসে আমেরিকার NASA এর বিজ্ঞানীরা বায়ুমন্ডলের 600 কিলোমিটার উচ্চতায় কৃত্রিম উপগ্রহে এই টেলিস্কোপ স্থাপন করেন। জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানী এডউইন হাবলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এটির নামকরণ করা হয় হাবল স্পেস টেলিস্কোপ (HST) [চিত্র ১১.১২ ] এই বিশেষায়িত টেলিস্কোপ মহাকাশের বিভিন্ন নক্ষত্র, গ্যালাক্সি ইত্যাদির স্পষ্ট চিত্র পৃথিবীতে প্রেরণ করছে, যা পর্যালোচনা করে মহাবিশ্ব সম্পর্কে অনেক নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। হাবল টেলিস্কোপ প্রেরিত তথ্য বিশেষণ করে মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারণশীল, তা প্রমাণিত হয়েছে।
গামা রে টেলিস্কোপ
Gamma Ray Telescope
তাড়িতচৌম্বক বর্ণালীর মধ্যে গামা-রে হলো সবচেয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি কম্পাঙ্কবিশিষ্ট। গামা রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসর 10-15 m থেকে 10- “m পর্যন্ত্ বিস্তৃত। সবচেয়ে শক্তিশালী ফোটন দ্বারা গামা রশ্মি গঠিত। ফলে এর ভেদন ক্ষমতা অত্যড় বেশি।
গামা রশ্মি বিভিন্ন উৎস থেকে নিঃসৃত হয়: যেমন-
(ক) পরমাণুর নিউক্লিয়াস উচ্চ শক্তি ড়র থেকে নিম্ন শক্তি ড়রে স্থানাস্ত্বরের ফলে,
(খ) তেজস্ক্রিয় পরমাণুর ভাঙ্গনের সময় এ রশ্মি উৎপন্ন হতে পারে,
(গ) মহাজাগতিক উত্তপ্ত বস্তুসমূহে বিভিন্ন বিক্রিয়ার কারণে গামা রশ্মি উৎপন্ন হয়। যেমন- সুপারনোভা বিস্ফোরণ, নিউট্রন নক্ষত্র, পালসার, কৃষ্ণবিবর থেকে গামা রশ্মি নিঃসৃত হয়।
মহাজাগতিক গামারশ্মির উৎসগুলো জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আগ্রহের ও গবেষণার বিষয়বস্তু। মহাকাশে সংঘটিত বিভিন্ন হিংস্র ঘটনায় (Violent Events) গামা রশ্মি উৎপন্ন হয়। মহাবিশ্বের বিভিন্ন নক্ষত্র, গ্যালাক্সিসমূহ হতে আগত গামারশ্মি বিশেষণ করে নির্দিষ্ট মৌলিক পদার্থের উপস্থিতি ও সংঘটিত নিউক্লিয় ঘটনাগুলোর অস্ত্রিত্ব নির্ণয় করা যায়।
মূলনীতি:
গামা-রে টেলিস্কোপ সাধারণ টেলিস্কোপের মতো নয়। এখানে প্রতিফলক হিসেবে দর্পণ ব্যবহার করা হয় না। কারণ গামা রশ্মি সাধারণ আলোর চেয়ে দশ মিলিয়ন গুণ শক্তিশালী এবং এক্স-রের চেয়ে হাজার গুণ শক্তিশালী। গামা রশ্মির ভেদনক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ায় দর্পণের ভেতর দিয়ে চলে যায় এবং শোষণ বা প্রতিফলন ঘটে না। এ কারণে গামা রশ্মি সনাক্ত করার জন্য বিশেষ ধরণের ডিটেকটর ব্যবহার করা হয়। একে সিন্টিলেশন ডিটেকটর (Scintillation detector) বা দ্যুতিময় সনাক্তকারী যন্ত্র বলা হয়।
ডিটেকটরের মধ্যে ঘন সন্নিবিষ্ট স্ফটিক এর বণ্টক থাকে। গামা রশ্মি ঐ ডিটেকটরের মধ্য দিয়ে যাবার সময় তাদের শক্তির কিছুটা অংশ দ্যুতিময় পদার্থের কণাগুলোতে স্থানার করে। এর ফলে অধিক শক্তির আহিত কণা সৃষ্টি হয় যা সিন্টিলেটর এর কেলাসের মধ্যে মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে নিম্ন শক্তির ফোটন তৈরি করে। এই নিম্ন শক্তির ফোটন সনাক্তকারী যন্ত্র দ্বারা সংগ্রহ করে আপতিত গামা রশ্মির তীব্রতা নির্ণয় করা যায় এবং এগুলো প্রতিবিম্ব তৈরি করে।
এক্স-রে টেলিস্কোপ
X-ray Telscope
মহাবিশ্বের বিভিন্ন এক্স-রে উৎসগুলো দীর্ঘদিন ধরে জ্যোতির্বিদদের আগ্রহ ও আকর্ষণের বিষয়বস্তু হিসেবে কাজ করছে। মহাকাশে সংঘটিত বিভিন্ন ধ্বংসাত্বক (Violent) ঘটনা, যেমন- নক্ষত্রের বিস্ফোরণ থেকে এক্স-রে নির্গত হয়। এক্স রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অত্যল্ড ক্ষুদ্র বলে সাধারণ দর্পণগুলো এক্স-রে তরঙ্গদৈর্ঘ্য কাজ করে না। সাধারণ দর্পণে এ রশ্মি আপতিত হলে প্রতিফলনের পরিবর্তে এদের ভেতর দিয়ে ভেদ করে চলে যায়।
এক্স-রে টেলিস্কোপ এসব রশ্মি পর্যবেক্ষণ এবং বিশেষণ করে মহাজাগতিক ঘটনা সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। পৃথিবীর বায়ুমন্ডল কর্তৃক বেশিরভাগ এক্স-রশ্মি শোষিত হয়। তাই এক্স-রে টেলিস্কোপ কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেট বা বেলুনে স্থাপন করা হয়।
মূলনীতি:
এক্স-রে টেফিস্কোপে ধাতব নির্মিত দর্পণ ব্যবহার করা হয়। মহাজাগতিক উৎস থেকে আগত এক্স-রে যাতে টেলিস্কোপের দর্পণে শোষিত না হয়, এজন্য দর্পণের পৃষ্ঠগুলোকে স্বর্ণ বা ইরিডিয়ামের পাতলা ড় দিয়ে প্রলেপ দেয়া হয়। এক্স-রশ্মিকে দর্পণ তলে অতি ক্ষুদ্র কোণে আপতিত ও প্রতিফলন করা হয়। যে বিশেষ প্রযুক্তি বা কৌশলের মাধ্যমে এটি করা হয় তাকে বলা হয় গ্রেজিং আপতন (Grazing Incidence) বা ‘আলতো করে ছুড়ে দেওয়া’ কৌশল । এই টেলিস্কোপে দর্পণগুলোকে এমনভাবে বসিয়ে নিখুঁতভাবে আকৃতি দেয়া হয় এবং তাদের পৃষ্ঠ বা তলগুলোকে এমনভাবে বসানো হয় যেন আপতিত এক্স-রশ্মির সাপেক্ষে এগুলো প্রায় সমাাল হয় ।
প্রতিফলিত এক্স-রশ্মি ফোটন ডিটেকটরে সংগ্রহ করা হয়। ডিটেকটর শোষিত ফোটনের শক্তি, সময় ও দিক রেকর্ড করে। প্রাপ্ত উপাত্ত বিশেণ্ঢষণ করে মহাজাগতিক পরিবেশের গঠন এবং অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। ১৯৯৯ সালে স্থাপিত চন্দ্ৰ (Chandra) নামক একটি এক্স-রে টেলিস্কোপ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে এবং ছায়পাথের বিভিন্ন নক্ষত্র, নিউট্রন তারকা, কৃষ্ণ বিবরের ছবি প্রেরণের মাধ্যমে নতুন নতুন তথ্য সরবরাহ করেছে।
সার-সংক্ষেপ :
রেডিও টেলিস্কোপ :
যে যন্ত্রের সাহায্যে তারকা, গ্যালাক্সি, কোয়াসার এবং অন্যান্য নভোমন্ডলীয় বস্তু থেকে | প্রাকৃতিকভাবে নির্গত তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ (রেডিও তরঙ্গ) সনাক্ত ও পরিমাপ করে ঐ সব বস্তু সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হয় তাকে রেডিও টেলিস্কোপ বলে ।
কৃত্রিম উপগ্রহ :
কৃত্রিম উপগ্রহ হলো এক ধরণের মহাশূন্যযান যা নির্দিষ্ট কক্ষপথ থেকে পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্য, বা অন্য কোনো গ্রহের চারদিকে আবর্তন করে।
বহুনির্বাচনী প্রশ্ন :
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। হাবলের টেলিস্কোপ একটি –
(ক) অপটিক্যাল টেলিস্কোপ
(খ) রেডিও টেলিস্কোপ
(গ) এক্স-রে টেলিস্কোপ
(ঘ) গামা-রে টেলিস্কোপ
২। রেডিও টেলিস্কোপ যে তরঙ্গ সনাক্ত ও পরিমাপ করে-
(ক) দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গ
(খ) বেতার তরঙ্গ
(গ) গামা রশ্মি
(ঘ) এক্স রশ্মি
আরও দেখুনঃ