আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ মহাবিশ্বের মূল বস্তু ও ঘটনা। যা বাউবি এইচএসসি ২৮৭১ পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র ইউনিট ১১ জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান এর অন্তর্ভুক্ত।
মহাবিশ্বের মূল বস্তু ও ঘটনা
মহাবিশ্বের মূল বস্তু ও ঘটনা বর্ণনার পূর্বে মৌলিক কণা সম্বন্ধে ধারণা থাকা দরকার। কারণ সকল বস্তুই এই মৌলিক কণার বিভিন্ন সমন্বয়ে গঠিত। এই মৌলিক কণার মধ্যে রয়েছে কণা ও প্রতিকণা।
কণা (Particle) ও প্রতি কণা (Antiparticle) :
প্রতি কণা হলো এমন কণিকা যার ভর এবং স্পিন অন্য একটি কণিকার সমান, কিন্তু যার চার্জ, বেরিয়ন সংখ্যা, লেপ্টন সংখ্যা অন্য কণিকাটির সমমানের অথচ বিপরীতধর্মী। বলবাহী কণা ছাড়া সকল কণারই প্রতি কণা রয়েছে। ইংরেজ পদার্থবিদ পল ডিরাক গাণিতিকভাবে প্রমাণ করেন যে, ইলেকট্রনের স্পিন ½ । এরপর তিনি ইলেকট্রনের বিপরীত কণা পজিট্রন (এন্টিইলেকট্রন, e+) আবিষ্কার করেন এবং এর জন্য পল ডিরাক ১৯৩২ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

যখন কণা ও প্রতিকণা মিলিত হয় তখন তারা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে নির্ভেজাল শক্তিতে রূপান্ত্রিত হয় এবং বিপুল পরিমাণ শক্তির উদ্ভব ঘটে। তবে সাধারণ পরমাণুতে কণা ও প্রতিকণা কখনও একসাথে থাকে না। কণাগুলো যেমন পদার্থ (Matter) গঠন করে তেমনি প্রতিকণাগুলো মিলে প্রতিপদার্থ (Anti Matter) তৈরি করে ।
মহাবিশ্বের সকল কণাকে দুভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথাঃ
(ক) ফার্মিওন ও (খ) বোসন। এ
এদের সম্পর্কে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
(ক) ফার্মিওন (Fermion) :
মহাবিশ্বের সকল পদার্থ এই কণিকা দ্বারা গঠিত। এদের স্পিন – । এরা পাউলির (Pauli) বর্জন নীতি মেনে চলে অর্থাৎ কখনই একটি পরমাণুতে দুটি ভিন্ন কণার সকল বৈশিষ্ট্য এক হতে পারে না। অদ্ভূত পক্ষে স্পিনের দিক থেকে হলেও বিপরীত হবে। এদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিকণা আছে। ফার্মিওন কণা আবার দু’রকমের (১) কোয়ার্ক ও (২) লেপ্টন।
১। কোয়ার্ক (Quark):
কোয়ার্ক পদার্থ গঠনের অন্যতম মৌলিক কণিকা। সকল বস্তু প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত। আর এই প্রোটন ও নিউট্রন গঠিত হলো কোয়ার্ক দিয়ে। দুটি আপ কোয়ার্ক ও একটি ডাউন কোয়ার্ক নিয়ে প্রোটন এবং দুটি ডাউন এবং একটি আপ কোয়ার্ক নিয়ে নিউট্রন গঠিত কোয়ার্ক মূলত ৬ টি। এগুলো হলো আপ (u) ও ডাউন (d), চার্ম (c) ও স্ট্রেঞ্জ (s) এবং টপ (t) ও বটম (b)। এদের প্রত্যেকের আবার তিনটি করে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণ (Colour) রয়েছে। এই বর্ণ বাড়বের রং নির্দেশ করে না বরং কণাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন কোয়ান্টাম অবস্থা নির্দেশ করে।
কোয়ার্কগুলোর চার্জের পরিমাণ ভগ্নাংশ; যেমন, 2/3,-1/3 । তবে তারা সব সময় এমনভাবে থাকে যেন নীট চার্জ পূর্ণসংখ্যা 3 3
হয় ।
কোয়ার্ক সব সময় দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে। কোয়ার্কের এক একটি দলকে বলে হ্যাড্রন (Hadron)। তিনটি কোয়ার্ক নিয়ে যে হ্যাড্রন গঠিত হয় তাদেরকে বলা হয় বেরিয়ন (Baryon)। যেমন- প্রোটন, নিউট্রন বেরিয়ন কণা। একটি কোয়ার্ক ও তার এন্টিকোয়ার্ক নিয়ে যে হ্যাড্রন হয় তাদের বলা হয় মেসন (Meson ) । যেমন; π মেসন, k মেসন ইত্যাদি।
২। লেপ্টন (Leptons) :
ছয় প্রকার লেপ্টন কণিকা রয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে উলেণ্ঢখযোগ্য হচ্ছে ইলেকট্রন। আর বাকি দুটো মিউওন। একটি মিউ মিউওন (u) ও অপরটি টাউ মিউওন (t)। আর এই তিনটির সাথে জোড়ায় রয়েছে ইলেকট্রন নিউট্রিনো (Ve ), মিউ নিউট্রিনো (V) এবং টাউ নিউট্রিনো (v.)। নিউট্রিনো (v) হচ্ছে তড়িৎ চার্জহীন, দুর্বল সক্রিয় এবং ক্ষুদ্র ভরের মৌলিক কণিকা। মিউ মিউওন ও টাউ মিউওন যথেষ্ঠ ভারী, তাদের প্রকৃতিতে সচরাচর পাওয়া যায় না। সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই ভেঙ্গে অপেক্ষাকৃত ছোট লেপ্টন তৈরি করে।
(খ) বোসন (Boson) :
মৌলিক বলগুলো কাজ করে কণার আদান-প্রদানের মাধ্যমে। এই বলবাহী কণাগুলোই হচ্ছে বোসন। এদের স্পিন পূর্ণসংখ্যা 0, 1 ইত্যাদি। বোসন কণা পাউলির বর্জন নীতি মানে না। এদের আলাদা প্রতিকণা নেই। এরা নিজেরাই নিজেদের প্রতিকণা। স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুসারে বোসন কণাগুলো দু’ধরনের। (i) গেজ বোসন (Gauge Boson) ও (ii) হিগস বোসন (Higgs Boson)।
(i) গেজ বোসন (Gauge Boson):
এদের স্পিন হলো 1। এই কণাগুলো হলো- গঢ়ুওন (g), ফোটন (Y) এবং w ও z বোসন ।
গণ্ডুওন : গওন কণা হলো সবল নিউক্লিয় বলবাহী কণা। এর নিশ্চল ভর শূন্য । ফোটন : এই কণা তাড়িতচৌম্বক বল বহন করে। এর নিশ্চল ভর শূন্য। W ও Z বোসন : w’, w- এবং z° এই তিনটি বোসন কণা দুর্বল নিউক্লিয় বলের বাহক। এ কণাগুলোর ভর আছে।
(ii) হিগস বোসন (Higgs Boson ) :
হিগস বোসন এর স্পিন 0, তবে এর ভর আছে। হিগস বোসন বুঝতে হলে হিগস ক্ষেত্র সম্বন্ধে জানতে হবে। হিগস ক্ষেত্র একটি তাত্ত্বিক বলক্ষেত্র যা সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। এই ক্ষেত্রের কাজ হলো মৌলিক কণাগুলোকে ভর প্রদান করা। যখন কোনো ভরহীন কণা হিগস ক্ষেত্রে প্রবেশ করে তখন তা ধীরে ধীরে ভর লাভ করে। ফলে তার চলার গতি ধীর হয়ে যায়। হিগস বোসনের মাধ্যমে ভর কণাতে স্থানান্ড্ররিত হয়। হিগস ক্ষেত্র ভর সৃষ্টি করে না, তা কেবল ভর স্থানান্ড্ররিত করে হিগস বোসনের মাধ্যমে। এই হিগস বোসনই ঈশ্বর কণা (God’s Particle) নামে পরিচিত।
গ্র্যাভিটন (Graviton):
কোয়ান্টাম তত্ত্ব মতে, গ্র্যাভিটন নামক এক ধরনের বোসন কণার আদান-প্রদানের মাধ্যমে মহাকর্ষ বল কাজ করে। গ্র্যাভিটনের প্রতিকণা সে নিজেই এবং স্পিন 2। ভরশূন্য এবং চার্জ নিরপেক্ষ এই কণা এখনও স্ট্যান্ডার্ড মডেলে স্থান পায়নি।
নক্ষত্রের জীবনচক্র (Life Cycle of Star)
শুর“তে নক্ষত্রে ছিলো আজ্ঞনাক্ষত্রিক ধূলিকণা ও গ্যাসের এক বিশাল মেঘ হিসেবে। মহাকর্ষ বলের প্রভাবে ধূলিকণা ও গ্যাসের এই বিশাল মেঘ সংকুচিত হয়। সংকোচনের সময় উচ্চ চাপ ও উচ্চ তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে যখন কয়েক মিলিয়ন কেলভিন হয়, তখন তাপ-নিউক্লিয় বা নিউক্লিয় ফিউশন বিক্রিয়া সংঘটিত হয়, ফলশ্র“তিতে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়। ফলে পদার্থের গোলকটি দীপ্তি ছড়ায় এবং নক্ষত্রের জন্ম হয়। নক্ষত্রের বিবর্তনে এটি হলো আদি ধাপ বা পর্ব। এই ধাপে বামন নক্ষত্র পাওয়া যায়। মোট নক্ষত্রের শতকরা 90 ভাগ হলো এই বামন নক্ষত্র (Dwarf star)। আমাদের সূর্য বর্তমানে এই ধাপে আছে।
নক্ষত্রের কেন্দ্রীয় মূলবস্তুতে যতক্ষণ পর্যড্ হাইড্রোজেন জ্বালানি থাকে, ততক্ষণ নক্ষত্রে তাপ নিউক্লিয় বিক্রিয়া ঘটতে থাকে। হাইড্রোজেন নিঃশেষ হয়ে গেলে নক্ষত্রের মূলবস্তু সংকুচিত হতে থাকে কিন্তু বহিঃস্থ অংশ তখনও প্রসারিত হতে থাকে। ফলে নক্ষত্রের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং একই সাথে পৃষ্ঠের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। নক্ষত্রের বিবর্তনের এই ধাপকে বলা হয় দানব নক্ষত্র ( Giant Star) বা অতি দানব নক্ষত্র (Super giant star)। এসব নক্ষত্রের ব্যাসার্ধ সূর্যের ব্যাসার্ধের 50% থেকে 200 গুণ পর্যড় হয়। এখন থেকে 5 বিলিয়ন (500 কোটি) বছর পরে আমাদের সূর্য এই ধাপে পৌঁছাবে।
নক্ষত্র বামন ধাপের চেয়ে অনেক কম সময় দানব ধাপে থাকে। প্রায় এক মিলিয়ন (দশ লক্ষ) বছর পর দানব নক্ষত্র শীতল হতে থাকে, ফলে নক্ষত্রটি সংকুচিত হতে থাকে। এর পরে এই নক্ষত্রের কী ঘটবে তা নির্ভর করে এর আদি বা মূল ভরের উপর।
শ্বেত বামন নক্ষত্র (White dwarf star) :
দুই সৌর ভরের চেয়ে কম ভরের কোনো নক্ষত্র যখন সংকুচিত হতে থাকে, তখন এর শক্তি মুক্ত হতে থাকে। কিন্তু এটি এমন একটি ধাপে বা অবস্থায় পৌঁছায় যে এটি এর বহিঃস্থ আণকে ছুঁড়ে দেয়। ফলে হঠাৎ করে প্রচুর পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় যা নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে দেয়। এই ধাপে নক্ষত্রটি এত উজ্জ্বল হয় যে, খালি চোখেও দেখা যায়। এটি এখন নোভা নক্ষত্র (Nova Star) এবং একটি নতুন নক্ষত্র। এই বিস্ফোরণে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে বলা হয় শ্বেত বামন নক্ষত্র (White dwarf star)।
নিউক্লিয় ফিউশন বিক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদনের জন্য কোনো হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম এতে থাকে না। এরা খুব উত্তপ্ত বিধায় সাদা আলো নিঃসরণকারী এবং অত্যধিক সংকোচনের ফলে এদের আকার খুবই ছোট হয়। এদের ঘনত্ব তাই খুবই বেশি থাকে। যেহেতু শ্বেত বামন তারায় শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় না, তাই একটি শ্বেত বামন তারা সময়ের সাথে সাথে কেবল শীতলই হতে থাকবে, আলো আস্ট্রে আস্ট্রে স্ট্রিমিত হতে হতে ‘কালো বামন’ তারায় তার শেষ পরিণতি ঘটবে। শ্বেত বামন নক্ষত্রের জন্য ভরের সীমা হলো 1.4 সৌর ভর।
১৯৩৫ সালে ভারতীয় বিজ্ঞানী সুব্রামনিয়াম চন্দ্রশেখর মাত্র ১৯ বছর বয়সে তাত্ত্বিকভাবে দেখান যে, কোনো নক্ষত্রের ভর যদি 1.4 সৌরভরের চেয়ে বেশি হয়, তখন এটি শ্বেতবামন নক্ষত্র হিসেবে স্থায়ীত্ব লাভ করতে পারবে না। নক্ষত্রের এই ভরকে চন্দ্রশেখর সীমা বলে। নক্ষত্রের ভর চন্দ্রশেখর সীমার চেয়ে বেশি হলে, এটি নিউট্রন স্টার বা কৃষ্ণ গহবরে রূপান্ডুরিত হবে ।
নিউট্রন স্টার (Neutron Star)
একটি নক্ষত্রের ভর যদি চন্দ্রশেখর সীমা অপেক্ষা বেশি হয় অর্থাৎ 1.4 থেকে তিন সৌর ভরের মধ্যে নক্ষত্রের ভর হলে সংকোচনের সময় এটি এমন একটি ধাপে পৌঁছায় যে, এটি এর বহিঃস্থ আড়ণ ছুঁড়ে দিয়ে অত্য উজ্জ্বল হয়ে যায়। একে বলা হয় সুপারনোভা ( Super Nova ) । নক্ষত্রটি যখন সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হয়, তখন এর মূলবস্তুর চাপ এত বিস্ফোরণের পর অবশিষ্ট কেন্দ্রীয় অংশ বেশি হয় যে, প্রোটন ও ইলেকট্রন একত্রিত হয়ে নিউট্রন গঠন করে। তাই একে বলা হয় নিউট্রন স্টার।
অতি উচ্চ চৌম্বকক্ষেত্রের কারণে নিউট্রন স্টার নির্দিষ্ট সময় অনড় অর বেতার স্পন্দন (Radio pulse) নির্গমন করে বলে একে পালসার বলে। নক্ষত্রের ভর 1.4 থেকে 3 সৌরভরের মধ্যে থাকলেই কেবল এটি নিউট্রন নক্ষত্রে পরিণত হতে পারে। নক্ষত্রের ভর 3.2 সৌরভরের চেয়ে বেশি হলে তখন এটি কৃষ্ণগহবর বা কোয়ার্ক নক্ষত্রে পরিণত হবে।
কৃষ্ণ বিবর (Black hole)
তিন সৌর ভরের সমান বা বেশি ভরের নক্ষত্রের সুপার নোভা বিস্ফোরণের পর এর অন্তর্বস্তু অনির্দিষ্টভাবে সংকুচিত হতে থাকে। সংকোচনের কারণে আয়তন প্রায় শূন্য এবং ঘনত্ব প্রায় অসীম হওয়ায় মহাকর্ষ ক্ষেত্র এমন প্রবল হয় যে, এ জাতীয় বস্তু থেকে এর মহাকর্ষকে কাটিয়ে কোনো প্রকার আলো বা সংকেতও বেরিয়ে আসতে পারে না। তাই বস্তুটিকে আর দেখা যায় না। নক্ষত্রের এই অবস্থাকে বলা হয় কৃষ্ণ বিবর (Black hole)। বাড়বে g-এর মান এত বেশি হয় যে, এমনটি ফোটন কণাও এর পৃষ্ঠ থেকে মুক্ত হতে বা বেরিয়ে আসতে পারে না। ১৯৬৯ সালে জন হুইলার নামক জনৈক মার্কিন বিজ্ঞানী কৃষ্ণ বিবর আবিষ্কার করেন ।
সোয়ার্জস্কাইল্ড ব্যাসার্ধ
M ভরের কোনো বস্তু তখনই কৃষ্ণ বিবর হিসেবে কাজ করবে যখন এর ব্যাসার্ধ একটি নির্দিষ্ট সংকট ব্যাসার্ধের সমান বা কম হবে। মুক্তি বেগ v এর সমীকরণে। এর পরিবর্তে c বসালে আমরা এই সংকট ব্যাসার্ধ পেতে পারি। এই সংকট ব্যাসার্ধ বের করার জন্য ১৯২৬ সালে কার্ল সোয়ার্ডস্কাইল্ড (Karl Schwarzchild) আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব ব্যবহার করেন। ফলে সমীকরণটি দাঁড়ায়,
c = √(2GM/Rs)
[ মুক্তিবেগ, v= √(2GM/R)
এখানে c আলোর দ্র“তি, Rs সংকট ব্যাসার্ধ। সংকট ব্যাসার্ধ Rs কে সোয়ার্ডস্কাইল্ড ব্যাসার্ধ বলে। Rs এর জন্য সমাধান করে পাই,
Rs = 2GM/c2
M ভরবিশিষ্ট অঘূর্ণনশীল কোন গোলকীয় বস্তুর ব্যাসার্ধ যদি Rs হয় তাহলে কোনো কিছুই (আলোও) এই বস্তুপৃষ্ঠ হতে মুক্ত হতে পারবে না এবং বস্তুটি কৃষ্ণ বিবর হিসেবে কাজ করবে। প্রত্যেক কৃষ্ণ বিবরের একটি ঘটনা দিগড় (Event horizon) থাকে। ঘটনা দিগড় হলো কৃষ্ণ বিবরের চারপাশের যে অঞ্চল থেকে কোনো প্রকার বিকিরণ বা সংকেত বেরিয়ে আসতে পারে না তার সীমানা। অর্থাৎ
কৃষ্ণ বিবরকে ঘিরে Rs ব্যাসার্ধের গোলকের পৃষ্ঠকে বলা হয় ঘটনা দিগড়। সুতরাং কৃষ্ণ বিবরের কেন্দ্র থেকে ঘটনা দিগন্ত্ পর্য দূরত্বকে সোয়ার্ডস্কাইল্ড ব্যাসার্ধ বলা হয় ।
একটি নির্দিষ্ট ভরের গোলকাকৃতি বস্তু যে ব্যাসার্ধ প্রাপ্ত হলে কৃষ্ণ বিবর হিসেবে কাজকরে, তাকে সোয়াজস্কাইলড ব্যাসার্ধ বলে।
কোয়াসার (Quasar)
মহাবিশ্বে এ যাবৎ কালের আবিস্কৃত সবচেয়ে বিস্ময়কর বস্তু সম্ভবত কোয়সার। কোয়াসার হলো মহাবিশ্বের সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তু। একটি কোয়সারের মোট শক্তির পরিমাণ একটি সম্পূর্ণ গ্যালাক্সির শক্তির চেয়ে প্রায় 100 গুণ বেশি। অথচ একটি কোয়াসারের ব্যাপ্তি আমাদের সৌরজগতের প্রায় দ্বিগুণের মতো। বিজ্ঞানীদের অনেকেই মনে করেন কোয়াসার হলো গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত ঘূর্ণায়মান বণ্ঢ্যাক হোল যা ক্রমাগত সন্নিকটবর্তী নক্ষত্রসমূহকে গ্রাস করে চলছে।
সুতরাং কোয়াসারের শক্তির উৎস বন্ধ্যাক হোল কর্তৃক নক্ষত্র গলধঃকরণ হতে পারে। কোয়াসার এখনও মহাবিশ্বের অতি রহস্যময় এক বস্তু। তবে কোয়াসারের যে বৈশিষ্ট্যগুলো এখন পর্যড্ জানা সম্ভব হয়েছে তাদের মধ্যে উলেণ্ঢখযোগ্য হলো: কোয়াসার দেখতে নক্ষত্রের মতো, তাদের রং নীলাভ, কতকগুলো কোয়াসার তীব্র বেতার বিকিরণের উৎস, কোয়াসারের লোহিত সরণ খুবই বেশি প্রভৃতি।
সার-সংক্ষেপ :
ফার্মিওন :
মহাবিশ্বের সকল পদার্থ এই কণিকা দ্বারা গঠিত। এদের স্পিন- । এরা পাউলির (Pauli) বর্জন নীতি মেনে চলে।
বোসন :
মৌলিক বলগুলো কাজ করে কণার আদান-প্রদানের মাধ্যমে। এই বলবাহী কণাগুলোই হচ্ছে বোসন। এদের স্পিন পূর্ণসংখ্যা 0, 1 ইত্যাদি।
গ্র্যাভিটন :
কোয়ান্টাম তত্ত্ব মতে, গ্র্যাভিটন নামক এক ধরনের বোসন কণার আদান-প্রদানের মাধ্যমে মহাকর্ষ বল কাজ করে। গ্র্যাভিটনের প্রতিকণা সে নিজেই এবং স্পিন 2।
বহুনির্বাচনী প্রশ্ন :
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। ঈশ্বর কণা নামে পরিচিত-
(ক) হিগস্-মেসন
(খ) হিগস্- বোসন
(গ) লেপটন কণা
(ঘ) কোয়ার্ক কণা
২। যে সকল বিনিময় কণা মহাকর্ষীয় মিথষ্ক্রিয়ার মধ্যস্থতাকারী সেগুলো হল-
(ক) গ্রাভিটন
(খ) ফোটন
(গ) হেড্রন
(ঘ) গওন
আরও দেখুনঃ