[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব

আজকে আমরা স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব সম্পর্কে  আলোচনা করবো। যা বাউবি এইচএসসি ২৮৭১ পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র ইউনিট ১ স্থির তড়িৎ এর অন্তর্ভুক্ত।

 

স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব

 

স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব

পরিবাহীর ধারকত্ব (Capacitance of a Conductor)

কোন বস্তুতে তাপ প্রয়োগ করলে যেমন এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তেমনি কোনো পরিবাহীতে আধান প্রদান করলে এর বিভবও তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। তাপবিজ্ঞানে কোনো বস্তুর তাপমাত্রা একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর তাপ ধারণ ক্ষমতা বলে। একইভাবে, স্থির তড়িৎ বিজ্ঞানে কোনো বস্তুর বিভব একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ আধানের প্রয়োজন হয়, তাকে ঐ বস্তুর আধান ধারণ ক্ষমতা বা সংক্ষেপে ধারকত্ব বলে।

 

google news
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

সংজ্ঞাঃ

কোনো বিভব একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ আধানের প্রয়োজন হয়, তাকে ঐ পরিবাহকের ধারকত্ব বলে। মনে করি, কোনো পরিবাহকের বিভব V পরিমাণ বৃদ্ধি করতে Q পরিমাণ আধান প্রয়োজন হয়, সুতরাং পরিবাহকের ধারকত্ব,

Q ∝ V

বা, Q/V ধ্রুবক = ধারকত্ব

C = Q/V ……………(1)

একক:

এস. আই বা SI পদ্ধতিতে ধারকত্বের একক ফ্যারাড (F)।

১ নং সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, V=1 ভোল্ট (V) এবং Q =1 কুলম্ব (C) হলে C=1 ফ্যারাড (F) হয়।

ফ্যারাডের সংজ্ঞা :

কোনো পরিবাহীর বিভব এক ভোল্ট (IV) বৃদ্ধি করতে যদি এক কুলম্ব (IC) আধানের প্রয়োজন হয়, তাহলে ঐ পরিবাহীর ধারকত্বকে এক ফ্যারাড (IF) বলে।

IF = IC/ IV = ICV-1

এক ফ্যারাড (IF) বেশ বড় একক বিধায়, একে সচরাচর ব্যবহার করা হয় না মাইক্রোফ্যারাড (ILF) ক্ইে ধারাকত্বের একক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এক ফ্যারাডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগকে এক মাইক্রোফ্যারাড বলে। অর্থাৎ 1uF=10°F.

মাইক্রোফ্যারাড ছাড়াও ন্যানোফ্যারাড (nF), পিকোফ্যারাড বা মাইক্রো মাইক্রোফ্যারাড (HuF) এককও ব্যবহার করা হয়। InF = 10°F এবং 1pF = 1upF=10-12 F

গোলাকার পরিবাহকের ধারকত্ব (Capacitance of a Spherical Conductor)

ধরি, r ব্যাসার্ধের একটি ফাঁপা গোলাকার পরিবাহককে K তড়িৎ মাধ্যমাঙ্কের একটি মাধ্যমে স্থাপন করা হলো, এতে + Q পরিমাণ আধান প্রদান করায় এর বিভব হলো V, সুতরাং গোলকটির ধারকত্ব হবে,
C = q/v ……………..(2)

গোলকে প্রদত্ত আধান গোলক পৃষ্ঠের সর্বত্র সমভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং গোলকের পৃষ্ঠ থেকে বলরেখাগুলো পৃষ্ঠের লম্বভাবে ব্যাসার্ধ বরাবর বাইরের দিকে বের হবে [চিত্র (ক)] বলরেখাগুলোকে পেছনের দিকে বর্ধিত করলে কেন্দ্রে মিলিত হবে [চিত্র (খ)]। আবার +Q আধানকে কেন্দ্রে আছে মনে করলেও ঠিক একই রূপে বলরেখাগুলো বের হবে। সুতরাং +Q আধানকে গোলকের কেন্দ্রে বিবেচনা করা যায়। কাজেই গোলকের পৃষ্ঠে বা গোলকের বিভব,

 

স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব

 

V= 1/4лε Kr . Q/r ………………(3)

২ নং সমীকরণে V এর মান বসিয়ে পাই,

C = 4лε০Kr. ……………..(4)

গোলকটি যদি বায়ু বা শূন্য মাধ্যমে অবস্থিত হয়, তাহলে K=1 হবে,

সুতরাং (4) সমীকরণ থেকে পাই-

C = 4лε০r

এখানে, 4лε০, রাশিটি ধ্রুবক,

C ∝ r …………….(5)

উপরের সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, গোলাকার পরিবাহকের ধারকত্ব এর ব্যাসার্ধের সমানুপাতিক ।

তড়িৎ ধারক (Electric Capacitor )

সাধারণভাবে ‘ধারক’ বলতে বুঝায় ‘ধারণকারী’ বা যে ধারণ করে, যে বস্তু আধান ধরে রাখতে পারে তাকে ধারক বলে। কোনো পরিবাহীর এ আধান ধরে রাখার ক্ষমতা অসীম নয়, কারণ প্রত্যেক পরিবাহীর একটি নির্দিষ্ট মাত্রার আধান ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। এ নির্দিষ্ট মাত্রার অতিরিক্ত আধান প্রদান করলে পরিবাহীটি ক্রমশ আধান হারাতে থাকবে, কোনো উপায় বা ব্যবস্থায় পরিবাহীর বিভব যদি কমানো যায় তবে পরিবাহীটি নির্দিষ্ট মাত্রার অতিরিক্ত কিছু আধান ধরে রাখার ক্ষমতা অর্জন করে, স্থির তড়িৎ বিদ্যায় ধারকত্ব বৃদ্ধি করার এ কৃত্রিম উপায় বা ব্যবস্থা বা কৌশলকে ধারক বলে।

সাধারণত একটি অীত ও অপর একটি ভূ-সংযুক্ত পরিবাহকের স্থানে কোনো অনক পদার্থ যেমন- বায়ু,কাচ, পণ্ডাস্টিক ইত্যাদি স্থাপন করে ধারক তৈরি করা হয়, পরিবাহী দুটিকে ধারক পাত এবং অনক পদার্থকে ডাইইলেকট্রিক পদার্থ বলে।

 

স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব

 

সংজ্ঞাঃ

যে যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কাছাকাছি দুটি পরিবাহীর মধ্যবর্তী স্থানে অক পদার্থ রেখে তড়িৎ সংরক্ষণ করে রাখা হয়, সে প্রক্রিয়াকে ধারক বলে।

ক্রিয়ানীতি :

চিত্র ১.১৯ এ A একটি অীত পরিবাহী। A-কে একটি তড়িৎ উৎপাদক যন্ত্রের সাথে যুক্ত করে ধন আধানে আহিত করলে এটি ধন বিভব প্রাপ্ত হবে। B ধারকটি আধান শূন্য বা ভূ-সংযুক্ত পরিবাহী। B ধারকটি A এর কাছে স্থাপিত (চিত্র ১.১৯)। B ধারকটি A এর কাছাকাছি স্থাপিত হওয়ায় আবেশ প্রক্রিয়ায় B ধারকটির যে প্রাA এর কাছাকাছি সে প্রাজ়ে ঋণ আধান এবং দূরবর্তী প্রাড়ে ধন আধান আবিষ্ট হবে। এখন B ধারককে ভূ-সংযুক্ত করলে পৃথিবী থেকে ইলেকট্রন B ধারকে প্রবেশ করে এর ধন আধানকে নিষ্ক্রিয় করবে। এখন B এর ঋণ আধান A এর উপর ঋণ বিভব আধ্যারোপণ করবে। ফলে A এর বিভব কিছুটা কমে যাবে ।

আমরা জানি, C= Q/V

সুতরাং A এর বিভব কমলে এর ধারকত্ব বৃদ্ধি পাবে, ফলশ্র“তিতে A নির্দিষ্ট মাত্রার অতিরিক্ত আধান গ্রহণ করতে পারবে। B কে যতই A এর নিকটে আনা হবে, A এর বিভব ততই কমবে এবং ধারকত্ব বৃদ্ধি পাবে। উপরের ঘটনা থেকে দেখা যায় যে, B পাতকে অর্থাৎ ভু-সংযুক্ত আধানহীন একটি পাত B কে A এর কাছাকাছি স্থাপন করায় A এর ধারকত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ যান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই ধারক বলে।

সার-সংক্ষেপ :

পরিবাহকের ধারকত্ব :

কোনো পরিবাহীর বিভব একক পরিমাণ বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ আধানের প্রয়োজন হয়, তাকে ঐ পরিবাহীর ধারকত্ব বলে ।

 

স্থির তড়িৎ এর ধারকত্ব

 

ফ্যারাডঃ

কোনো পরিবাহীর বিভব এক ভোল্ট (IV) বৃদ্ধি করতে যদি এক কুলম্ব (IC) আধানের প্রয়োজন হয়, তাহলে ঐ পরিবাহীর ধারকত্ব এক ফ্যারাড (IF) বলে।

গাণিতিক উদাহরণ

125 টি গোলাকার ফোঁটাকে (ব্যাসার্ধ 0.02m) একত্রে করে একটি বড় ফোঁটায় পরিণত করা হলো। যদি প্রতিটি ফোঁটায় আধানের পরিমাণ। 1C হয়, তবে বড় ফোঁটার ধারকত্ব ও বিভব নির্ণয় করুন।

এখানে,

ছোট ফোঁটার ব্যাসার্ধ, r = 0.02 m

বড় ফোঁটার ব্যাসার্ধ, = R

প্রতিটি ছোট ফোঁটার আধান, q = 1C

বড় ফোঁটার আধান, Q = 125 q = 125 C

বড় ফোঁটার ধারকত্ব, C =?

বড় ফোঁটায় বিভব, V = ?

বড় ফোঁটার আয়তন = ছোট ফোঁটার 125 গুণ

4/3πR3 = 125 x4/3πr3

বাং R3 = 125 r3

বা, R = 5r

বা, R = 5×0.02

.:. R = 0.10m

বড় ফোঁটার ধারকত্ব, C = 4πε০R

= 4×3.14×8.854×10-12×0.10

= 11.12×10-12 F

. : . বড় ফোঁটার বিভব, V = Q/C

= 125 /(11.12×10-12)

=11.24×1012 V

উত্তরঃ 11.12×10-12 F ও 11.24×10-12 V

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment